মহুল উড ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে কলকাতার রোটারি সদনে আগামীকাল দেবগোপাল মন্ডলের ছোট কাহিনীচিত্র ”ছায়াপথ” প্রদর্শিত হতে চলেছে!

একজন নিম্ন মধ্যবিত্ত চাষী পরিবারের সন্তান, আঠারো বছর বয়সে কোলকাতা চলে আসেন সিনেমা বানানোর আশা নিয়ে। তারপর গ্রিয়ারসন মুভিজের আন্ডারে প্রথম কাজ শুরু। এভাবে এখনো পর্যন্ত মোট ৯ টি ছবি, ৪ টে তথ্যচিত্র, ৫ টি ছোট কাহিনীচিত্র তিনি দর্শককে দিয়েছেন, যেগুলি বহু আর্ন্তজাতিক চলচ্চিত্র উৎসবেও প্রদর্শিত হয়েছে। তিনি  চিত্র-পরিচালক দেবগোপাল মন্ডল।  আগামীকাল তার  পরিচালিত ছোট কাহিনীচিত্র ”ছায়াপথ” কলকাতার রোটারি সদনে মহুল উড ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে প্রদর্শিত হতে চলেছে। এছাড়াও এই মুহুর্তে তিনি আমেরিকান দুতাবাস ও ভিডিও ভলেন্টিয়ারের উদ্যোগে  “মানব প্রাচার” নামে একটি তথ্যচিত্রের কাজ করছেন এবং বিশ্বায়ন ও দারিদ্রতা নিয়ে ”সেই ছেলেটা” ও এন আর সি নিয়ে আরো দুটো ছবির সম্পাদনার কাজও করছেন।

স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি ছায়াপথের গল্পের ব্যাপারে তিনি জানান, প্রায় পনের বছর পর অমল গ্রামে ফেরে “নারী ও প্রকৃতি” নিয়ে ফোটোস্টোরি বানাবে বলে। মডেল তার ছোট বেলার বন্ধু সুধা। কিন্তু সুধা নারাজ কারন সে বেশ মোটা হয়ে গেছে এবং অতি সাধারন দেখতে সেখানে তাকে মডেল হিসেবে মানাবে না। অমলের ইচ্ছে বিঞ্জাপনীর সংস্থার বেঁধে দেওয়া সৌন্দর্যের প্রচলিত ধারণাটাই বদলে দেওয়া। এরপর উঠে আসে দুর্গা লক্ষ্মী সরস্বতীদের বয়স না বাড়া আবার কালী মনসার পোষাক ও কালচারের জন্য স্ব্রর্গে ঠাঁই না পাওয়ার প্রসঙ্গ। বডিশেম নিয়ে অনেক কথা বার্তার পর রাজি হয় সুধা। সুধার জানালার বাইরে দিয়ে পেরিয়ে যাওয়া নন্দিনী ও তাকে রাজি হয়ে যেতে বলে। চলতে থাকে ফোটোশ্যুট, যেখানে বিশ্বের বিষ হরণ করা দেবী মনসা আজ বিষে আক্রান্ত জল দুষনের জন্য। এমনকি তার বিষাক্রান্ত শরীরটা যে ভেলায় শোয়ানো সেটাও থেমে গেছে প্লাস্টিক বোতল প্যাকেটে। আবার সরস্বতী যার সব কিছুই সাদা সেই মিথ ভেঙে দেখি আদিবাসী সাজে সরস্বতী রূপী সুধাকে পেপারের পোষাক পরে। ফলত গাছ কাটা এবং বর্ণ বৈষম্যের বিরোধিতার পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা এবং অপ সংস্কৃতির প্রসঙ্গও আসে।কাঁটাতারের ওপারে দাঁড়ানো লক্ষ্মীর সাথে মিলে যায় পাচার হওয়া দামী গাছ ও নারীরা।অত্যাধিক ফলনের জন্য জমিতে কীটনাশকের ব্যবহার, পাহাড় ভেঙে বসতি, জঙ্গল কেটে সভ্যতা ফলত প্রকৃতি এবং ধর্ষিতা নারী মিলে মিশে যায় অমলের ফোটোস্টোরিতে।

এরই মধ্যে অমল সুধাকে ভালোবাসার কথা জানায় এবং বিয়ের প্রস্তাব দিতেই সুধা ওকে এড়িয়ে যায়। অমল ফিরে যায় সুধাও নিজেকে একাকিত্ত্বে নির্বাসিত করে। বেশ কিছুটা সময় পরে অমল আবার গ্রামে ফেরে কিন্তু সুধা দেখা করে না। ও মন খারাপ করে ফেরত যাবে এমন সময় বিশু খ্যাপার সাথে তার দেখা, বিশুকাকাকে সুধার না আসার কথা বলতেই ও চমকে ওঠে, জানতে পারে প্রকৃতির মতোই সুধাও পুরুষের দ্বারা নির্যাতিত হয়েছে এবং তার শরিরে H.I.V ভাইরাসের জীবাণু। অমল সুধাকে জানায় যে নিয়মিত চিকিৎসা আর সংযমী জীবন যাপনের মধ্যে দিয়ে পাঁচজন সুস্থ মানুষের মতো আবারও নতুন জীবন ফিরে পাওয়া যায়।

এখন দেখার ”ছায়াপথ” দর্শকের মনে কতটা প্রভাব ফেলতে পারে।

 

Facebooktwittergoogle_plusredditpinterestlinkedinmail

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *