চুনী কোটালের পর,আরেক শবর কন্যা ডিস্টিংশন নিয়ে অনার্স গ্র্যাজুয়েট হলেন!

পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়ার বরাবাজার থানার ফুলঝোর গ্রামের শবর কন্যা রমনিতা শবর স্নাতক স্তরে রীতিমত ভাল ফল করে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে।৭৬ শতাংশ নম্বর পেয়েছে মেধাবী এই কন্যা। দরিদ্র পরিবারের মেয়ে রমনিতার শৈশব থেকেই ছিল লেখাপড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহ। প্রথম থেকেই তাকে সবরকম ভাবে সাহায্য করে আসছিল বাবা মহাদেব শবর এবং মা বেহুলা। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর রমনিতা ভর্তি হয় পটমদা ডিগ্রি কলেজে। বাড়ির কাছাকাছি হলেও এই কলেজটি ঝাড়খণ্ড রাজ্যের সরাই কেলা খরসোঁয়া জেলায় অবস্থিত। কলহান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন এই কলেজ থেকে ষষ্ঠ সেমিস্টারের পরীক্ষা দেবার পর সম্প্রতি ফল প্রকাশিত হয়েছে। শবর জনজাতি হল পুরুলিয়া তথা সমগ্র পূর্ব ভারতের অন্যতম প্রাচীন এবং পিছিয়ে পড়া জনজাতি। পুরুলিয়া জেলায় এখনও পর্যন্ত এই জনজাতির কোন মেয়ের এই সাফল্য নেই বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, ১৯৮৫ সালে চুনী কোটাল প্রথম আদিম জনজাতির কন্যা হিসেবে স্নাতক হয়েছিলেন।১৯৬৫ সালে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গোহলডিহি গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। এরপর তিনি ১৯৮৩ সালে ঝাড়গ্রাম আইটিডিপি অফিসে লোধা সমাজকর্মী হিসেবে প্রথম চাকরি পান।অবশেষে তিনি ১৯৮৫ সালে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নৃতত্ত্বে স্নাতক হন। স্নাতক হওয়ার দুই বছর পর তিনি মেদিনীপুরের ‘রানী শিরোমনি এসসি অ্যান্ড এসটি গার্লস হস্টেল’ এর হস্টেল সুপারিন্টেন্ডেন্ট হিসেবে নিযুক্ত হন।স্থানীয় বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স কোর্সে (এমএসসি) ভর্তি হওয়ার পর ঝামেলা শুরু হয়। তার প্রতি বৈষম্যমূলক ব্যবহার করা হয়, তাকে প্রয়োজনীয় পাস গ্রেড দিতে অস্বীকার করা হয়। ১৯৯২ সালের ১৬ আগস্ট তিনি আত্মহত্যা করেন। তাঁর কাহিনী প্রখ্যাত লেখক-অ্যাক্টিভিস্ট তাঁর লেখা বায়ধখণ্ডতে (১৯৯৪) তুলে ধরেন।

Facebooktwittergoogle_plusredditpinterestlinkedinmail

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *